সাইফুর নিশাদ, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদিতে শ্বশুরশ্বাড়িতে আগুনে দগ্ধত তিশা সাহা (২০) নামে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে সাত দিন চিকিৎসাধীন থেকে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে তার মৃত্যুফ হয়।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে নরসিংদী শহরের পশ্চিমকান্দা পাড়ার সেবাসংঘ এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে আগুনে দ্বগ্ধ হন তিশা। পরে তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল নেওয়া হলে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক তিশাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মৃত তিশা সাহা পশ্চিমকান্দা পাড়ার সেবাসংঘ এলাকার কাজল সাহার স্ত্রী। প্রায় দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।
স্থানীয়রা জানায়, গৃহবধূ তিশা ও তার শাশুড়ি মায়া রানী সাহার মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকতো। গত ৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সন্ধ্যায় কাজল সাহার বাড়িতে চিৎকার শুনতে পান প্রতিবেশীরা। কিন্তু গেট বন্ধ থাকায় কেউ বাড়ির ভেতরে যেতে পারেনি। প্রায় ২ ঘণ্টা পর বাড়ির সদস্যরা বের হয়ে প্রতিবেশীদের জানায়, তিশা রান্না ঘরে কাজ করতে গিয়ে আগুনে দ্বগ্ধ হয়েছেন। পরে স্বামী কাজল সাহাসহ বাড়ির অন্যরা তিশাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জানা যায়, তিশার শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে ঝলসে যাওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢামেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। আগুনে তিশার শরীরের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ পুড়ে যায় বলেও জানান চিকিৎসকরা।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে তিশাকে হত্যা করেছে।
নিহতের বোন পূজা সাহা বলেন, তিশার শাশুড়ি তাকে দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করে আসছেন। এই অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগুনে ঝলসে যাওয়ার পরও তাকে দুই ঘণ্টা যাবত আটকে রেখেছে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসপাতালে অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করে মারা গেছে।
এ বিষয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।